1. dainiklalmoniralolive@gmail.com : দৈনিক লালমনির আলো : দৈনিক লালমনির আলো
  2. info@www.dainiklalmoniralo.live : দৈনিক লালমনির আলো :
শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:৩১ পূর্বাহ্ন
সর্বশেষ :
ভেলাবাড়ী ইউনিয়নের ব্যাঙের চওড়া গ্রামের মিন্টু মিয়া ও তার পিতা সরব আলীর উপর দেশীয় অস্ত্র দিয়ে হামলার অভিযোগ উঠেছে কক্সবাজার – মহেশখালী নৌ রুটে প্রথমবার চালু উওর মানিকপুর তনু মিয়ার ছেলে রহিম মিয়া প্রতারণা করে ফারুকের পরিবার থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় কুড়িগ্রামে ছয় দফা দাবি আদায়ে কাফনের কাপড় পরে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের মিছিল লাইফ স্কয়ার হাসপাতালের মালিক প্রতারক গোলাম রাব্বানী জুয়েল ৭৬ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয় সাধারণ জনগণ থেকে  হিলি দিয়ে ২.৬৭ লাখ মেট্রিক টন চাল আমদানি শেষে বন্ধ হচ্ছে দ্বিতীয় দফা চাল আমদানি সেন্টমার্টিনগামী জাহাজ কেয়ারী সিন্দাবাদের অফিসে আগুন সেনবাগ ৯নং নবীপুর ইউনিয়নে মিথ্যা মানববন্ধনের প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেন বিএনপির নেতা শেখ আহমেদ লালমনিরহাটে সচেতন নাগরিক সমাজের বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ  বড়বাড়ি শহীদ আবুল কাশেম কলেজ মাঠে বৈশাখীর ঘোড়া খেলায় রেকর্ড দর্শক সমাগম!

গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ
  • প্রকাশিত: শনিবার, ২৯ মার্চ, ২০২৫
  • ৬৪ বার পড়া হয়েছে

গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে পানি ছেড়ে দিয়ে নদীকে খাল দেখিয়ে খনন করার অভিযোগ উঠেছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কতৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি। ফয়সাল রহমান জনি গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধি। প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে। আর পানি ছেড়ে নদী খনন করলে কাঙ্ক্ষিত ফলাফল না পাওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, শুরুর দিকে পানির মুখে বাঁধা দেওয়া ছিল। প্রকল্পে অনিয়ম,  দূর্নীতি করতেই তারা ইচ্ছেকৃতভাবে পানি ছেড়ে খনন কাজ করছেন। ভেকু (এক্সেভেটর) দিয়ে নদীর সামান্য মাটি কেটে সেগুলো পাড়ে অপরিকল্পিতভাবে রাখা হচ্ছে। বর্ষা এলেই পার ভেঙ্গে নদী ভরাটের পাশাপাশি সেই মাটি আবাদি জমিতে পড়বে। নদীর তলদেশ ৬ থেকে ৭ ফিট গভীর করার কথা। কিন্তু পানি থাকার কারণে সেটাও আর বোঝার উপায় নেই। দুই পাড়ের অপরিকল্পিত প্রশস্ততা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

নদীকে খাল দেখিয়ে পূন:খনন কাজ করার বিষয়ে জানতে চাইলে গাইবান্ধা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী হাফিজুল হক বলেন, ‘আসলে নদীর পানি ব্যবস্থাপনা  সংক্রান্ত সকল কাজ করে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিআইডাব্লিউটিএ। নদীকে কেন খাল দেখিয়ে বরেন্দ্র কতৃপক্ষ কাজ করছে, তা আমার বোধগম্য নয়। তাছাড়া জেলার তালিকাভুক্ত ২৪টি নদীর একটি নলেয়া নদী। নদী না বলে খাল বললে এর পরিচয় বিপন্ন হবে।

কৃষক ও কৃষির উন্নয়নে গভীর নলকূপ পূনর্বাসন ও স্থাপন, বিদ্যুতায়ন ও নালা নির্মাণ, ভূ-গর্ভস্থ পানি সংরক্ষণ, কৃষি ব্যবস্থার দক্ষতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিকরণ, পানি বিতরণ ও প্রি-পেইড মিটার স্থাপন, চারারোপণ, অকেজো নলকূপ সচলকরণ, পুকুর পূন:খনন, খাল খননসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কতৃপক্ষ।

গাইবান্ধা বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কতৃপক্ষ সূত্রে জানা যায়, ইআইআরপি (ভূ-উপরিস্থ পানির সর্বোত্তম ব্যবহার ও বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের মাধ্যমে রংপুর অঞ্চলে সেচ সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় জেলার সাদুল্লাপুর উপজেলায় খাল খনন কাজ হাতে নেয় বরেন্দ্র কতৃপক্ষ। উপজেলার নলেয়া নদীর ফরিদপুর ইউনিয়নের মহেষপুর মাঝিপাড়া স্থান থেকে শুরু করে একই উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের কুঞ্জ মহিপুর ব্রীজের শেষ মাথা পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার (৯.৯৫০ কিমি) নদী খনন কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি টাকা। কাজটি পায় ১৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ শুরুর  আদেশ দেওয়া হয় গত বছরের ২ ডিসেম্বর। ৪৫ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করার কথা বলা হলেও চলতি বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি কাজ শেষ হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাদুল্লাপুর উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের কুঞ্জ মহিপুর এলাকার নলেয়া নদীর ১০ কিলোমিটার অংশে খনন কাজ করছে রংপুর, নঁওগা, রাজশাহী ও পাবনার ১৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ব্রীজ সংলগ্ন রাস্তার পাশে একসাথে ৫টি ভেকু (এক্সেভেটর) দিয়ে নদী খননের কাজ চলছে। কিছুক্ষণ আগেই শুকনো নদীটিতে উজান থেকে পানি আসছে। সেই পানিতে নিমিষেই  ভরে যাচ্ছে নাব্যতা হারানো এক মরা নদী। বোঝাই গেল কিছুক্ষণ আগেও শুকনো ছিল নদীর তলদেশ। সদ্য পানি ছেড়ে দিয়ে কাজ শুরু করা হয়েছে। দেখতে দেখতে পানি বুক সমান। আর এই পানির মধ্যেই এক্সেভেটর দিয়ে মাটি কাটা হচ্ছে। খননের ভেজা, কাদা মাটি পাড়েই এবড়োখেবড়ো করে রাখা হচ্ছে।

খনন কাজ শেষ করা কিছু এলাকায় গিয়েও দেখা গেছে এমন চিত্র। এসব এলাকাতেও কোন রকমে খনন কাজ করা হয়েছে। দুই পাড় কোথাও সরু, কোথাও প্রশস্ত। কিছু জায়গায় বেশি সরু এবং অগভীর। অমসৃণ পাড় দিয়ে হেঁটে যাওয়াও মুশকিল।

সাদুল্লাপুর উপজেলার নলেয়া নদীর তীরবর্তী  বরেন্দ্র অঞ্চলের কৃষক জাহাঙ্গীর আলম
বলেন, পানি ছেড়ে দিয়ে কাজ করছে ঠিকাদার। নিয়ম অনুযায়ী কাজ না করাটা তো ঠিক নয়। কোনখানে কতটুকু গভীর করছে, সেটা তো বোঝা যাচ্ছেনা। পানি ছেড়ে দিয়ে লোক দেখানো কাজ করে বিল নিয়ে চলে যাবে ঠিকাদার। দেখার কেউ নাই।

কুঞ্জ মহিপুর গ্রামের কৃষক মোত্তালেব মিয়া বলেন, ‘খাল খননে কোন নিয়ম মানা হচ্ছেনা। মাটি কাটার শুরুতে পানির মুখে বাঁধ দেওয়া ছিল। মাটি কাটা শুরুর এক ঘন্টা পরেই বাঁধ কেটে দিয়েছে ঠিকাদারের লোকজন। এখন আর নদীর মাঝের মাটি কাটা লাগবেনা।  শুধু দুই পাড়ের মাটি কেটে কোনরকম কাজ শেষ করেই চলে যাবে। এভাবে কাজ করলে সরকারের কোটি টাকা গচ্চা যাবে’। আমাদের কোন উপকারে আসবে না।

স্থানীয় কৃষক কুরবান আলী বলেন, এলাকায় কৃষকরা চরম পানি সংকটে আছেন। আমার ৭০ শতাংশ জমির মধ্যে অর্ধেক জমি নদীতে পড়েছে। সবার স্বার্থে আমি জমি ছেড়ে দিয়েছি। কিন্তু তারপরও পানি ছেড়ে দিয়ে খনন করবে কেন? নদীর দুই পাড়ের অনেক জায়গায় দূরত্ব কম। এভাবে তো খোড়া ঠিক হবেনা। এই কৃষকের পানির জন্যই তো এতটাকা ব্যয় তাইনা?

সালাম মিয়াসহ কয়েকজন স্থানীয় ব্যক্তি এ প্রতিবেদককে বলেন, চালাকি, সবি চালাকি।
পানির মধ্যে তো কিছু দেখা যায় না। ওরা অনুমান করে খালি পাড় খুড়ে যাচ্ছে’। তাদের দাবি, খনন প্রকল্পের কাজগুলো সঠিকভাবে হয়েছে কিনা, সেটা নিশ্চিত করতে উচ্চ পর্যায়ের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হোক।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কতৃপক্ষের এক উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তা বলেন, পানি প্রবাহ বন্ধ রেখে শুকনো অবস্থায় খাল বা নদী খনন কাজ করতে হয়। পানি ছেড়ে দিলে তো নদীর তলদেশের কোথায়, কতটুকু খনন করা হচ্ছে, তা বোঝা যাবেনা। নদী বা খাল, যেটাই খনন করা হোক, তা শুকনো না শুকনো অবস্থা সৃষ্টি করে করতে হবে। তা না করা হলে সঠিক খনন হবেনা।

১৫টি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি নওগাঁ জেলার এনায়েত পুরের দয়ালের মোড়ের মেসার্স খান ট্রেডার্স। প্রতিষ্ঠানটির দুটি আইডির বিপরীতে কাজ করেছেন  মসলেম ও আইয়ুব আলী নামের দুই ঠিকাদার। কাজের অগ্রগতি রিপোর্ট অনুযায়ী তারা শতভাগ কাজ শেষ করেছেন।

কাজে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে ঠিকাদার আইয়ুব আলী বলেন, ‘আমাদের ১২০০ মিটার অংশে বাঁধ দিয়ে শুকনো অবস্থায় খনন কাজ করেছি। পানিতে তো খনন কাজ করা যাবেনা। এই ধরনের অনিয়ম আমাদের অংশে হয়নি।

নওগাঁ জেলার আরেক ঠিকাদার আব্দুল মজিদ। তিনিও একাই দুই আইডিতে নদীর ১৬০০ মিটার অংশের কাজ শেষ করেছেন। কাজের অগ্রগতি ৯০ শতাংশ। তার হয়ে কাজ করেছেন সাজু ও মজিদ নামের দুই ঠিকাদার।

সাজু এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘পানি ছেড়ে দিয়েও কাজ করা যায়। আমার লোক সেখানে (কাজের স্থান) রয়েছে। আপনি যখন এসেছেন, বিকাশ নাম্বার দেন, কিছু টাকা বিকাশে পাঠিয়ে দিচ্ছি’।

অভিযোগ রয়েছে, গাইবান্ধা রিজিয়নের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম দীর্ঘদিন বিভিন্ন প্রকল্প থেকে ব্যাপক অনিয়ম দূর্নীতির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা লোপাট করেছেন।

গাইবান্ধা রিজিয়নের নির্বাহী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পানি ছেড়ে দিয়ে খনন করা ঠিক হয়নি। আমি ঠিকাদারকে মেজারমেন্ট অনুযায়ী মাটি খনন করতে বলেছি। প্রয়োজনে প্রতিটি জায়গায় মেপে নেব। পানি ছেড়ে কাজ করার বিষয়ে তাদের কাছে জবাব চাওয়া হবে’। ঠিকাদারকে বলেছি, তারা আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবে।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

আরো সংবাদ পড়ুন

পুরাতন সংবাদ পড়ুন

সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি রবি
 
১০১১১২১৩১৪১৫১৬
১৭১৮১৯২০২১২২২৩
২৪২৫২৬২৭২৮২৯৩০
৩১  
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ওয়েবসাইট ডিজাইন: ইয়োলো হোস্ট